শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড

শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড

২০০৯ সালের পর হতে বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। দেশে তথ্য প্রযুক্তির প্রচার ও প্রসার এবং তার ব্যবহার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় যার স্পর্শ স্বাস্থ্য খাত কে ও ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের দিকে ধাবিত করে। ম্যনেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম – এম আই এস স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান সমূহে স্থাপন করে ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার। ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ পৌছে দেয়া হয় সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান সহ গ্রামীন জনপদের কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক মানের ডাটা সেন্টার স্থাপন করা হয় ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস ভবনে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল হেলথ স্ট্রেটেজি অনুমোদন পেয়েছে।  এই অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড বাস্তবায়নের নিমিত্তে ২০১২ সালে হাসপাতাল অটোমেশন সিস্টেম এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে দেশে ৭০টি হাসপাতালে চলমান রয়েছে, ১২টি আরবান হেলথ সেন্টার এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জুন ২০২৪ নাগাদ এইচআইএস ও ই-হেলথ অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫০টি তে। একই সাথে কাজ এগিয়ে চলেছে সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড (হেলথ আইডি কার্ড), প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্য তথ্যের ডিজিটাল সংরক্ষন ( ইএইচআর), স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আন্তর্জাতি মানদণ্ড সমূহের প্রনয়ন ও ব্যবহার, নাগরিককে সেবা প্রদানের তথ্য সমূহের আদান প্রদান (সরকারি, বেসরকারি ওব্যক্তিগত চেম্বার) সহ স্বাস্থ্য তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার কার্যক্রম।

ভিশন

নাগরিক অধিকার নিশ্চিত কল্পে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমুহে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বল্প খরচে, কম সময়ে উপযুক্ত, মানসম্মত, সঠিক ও সমপযোগী স্বাস্থ্য সেবার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা।

উদ্দেশ্য

  • সকল স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সমুহে হাসপাতাল অটোমেশন কার্যক্রম চালু করা।
  • অনলাইন এপয়েন্টমেন্ট ও ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালু করা।
  • সবার জন্য স্বাস্থ্যকার্ড ( হেলথ আইড সম্বলিত)
  • সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান সমুহে ব্যবহৃত সকল ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ড সমূহকে শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা।
  • প্রতিটি নাগরিকের স্বাস্থ্য প্রোফাইল প্রস্তত ও স্বাস্থ্য সেবার তথ্য, ই-প্রেস্ক্রিপশন, রিপোর্ট সংরক্ষন করা।
  • কার্যকরী ডিজিটাল রেফারেল সিস্টেম চালু করা।
  • নাগরিকের স্বাস্থ্য তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড বাংলাদেশ (SHR Bangladesh) প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে আধুনিকীকরণ এবং ডিজিটাইজেশন সাধন করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রোগীর তথ্য ডিজিটাল ফরম্যাটে সংরক্ষণ, বিনিময় এবং ব্যবহার করা যাবে, যা রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা প্রদানে গতি এবং নির্ভুলতা বৃদ্ধি করবে।

এই প্রজেক্ট বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে নতুন দিগন্ত তৈরি করবে। রোগীর তথ্যের ডিজিটাইজেশন এবং সংরক্ষণ স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে গতিময়তা এবং সঠিকতা বাড়াবে, যা জরুরি মুহূর্তে জীবন রক্ষায় সহায়ক হবে।

রোগীদের জন্য প্রধান সুবিধা হলো তাদের স্বাস্থ্য রেকর্ডে সহজে অ্যাক্সেস পাওয়া এবং সেগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করা। এছাড়া, চিকিৎসকরা রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ইতিহাস জানতে পারবেন যা তাদের চিকিৎসা প্রদানে সহায়ক হবে।

শেয়ার্ড হেলথ রেকর্ড বাংলাদেশ প্রকল্পের নীতিমালা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রক্রিয়াকে আরও সুশৃঙ্খল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে। এই নীতিমালাগুলি রোগীর তথ্য সুরক্ষা, তথ্যের নিরাপদ ব্যবহার, এবং তথ্যের বিনিময়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।

    • তথ্য সুরক্ষা: রোগীর তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করা এবং অনুমোদন ছাড়া তৃতীয় পক্ষের সাথে তথ্য শেয়ার না করার নীতি।

    • তথ্যের নিরাপদ ব্যবহার: তথ্যের ব্যবহার কেবল চিকিৎসা সেবা প্রদান, গবেষণা, এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।

    • তথ্যের বিনিময়ের স্বচ্ছতা: রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের প্রক্রিয়া পূর্ণ স্বচ্ছ ও রোগীর সম্মতিতে ভিত্তি করে হবে।

    • অ্যাক্সেস কন্ট্রোল: রোগীর তথ্যে অ্যাক্সেস করার অধিকার সীমিত করা, যেন কেবল অনুমোদিত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা তথ্য দেখতে পারে।